BANGLA, Blog

গরমে ত্বকের যত্নে ব্যবহার করুন এই ৩ টি কার্যকরী উপাদান – ভিটামিন সি, নিয়াসিনামাইড ও হায়ালুরোনিক অ্যাসিড

মাত্রাতিরিক্ত গরমের বিরূপ প্রভাবে ত্বকের যে কোন সমস্যা বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় সবচেয়ে বেশী দেখা যায়। তার ওপর বাতাসে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতিতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়ে। গরমের এই অস্বস্তিভাব এড়াতেই অনেক সময় ত্বকের স্বাভাবিক যত্ন কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু ত্বকের যদি নিয়মিত যত্ন একেবারেই না করা হয় তাহলে একনি, ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ততা, ডার্ক স্পটস, সান বার্ন, ট্যানিং কিংবা রেডনেস এর মতো সমস্যা তৈরি হবে। এতে ত্বক তার স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হারিয়ে হয়ে উঠবে রুক্ষ ও নিষ্প্রাণ।

এখন তাই বলে যা সামনে পাওয়া যাবে তাই দিয়েই স্কিন কেয়ার শুরু করলেই হবেনা। আজকে কথা হবে এমন ৩ টি কার্যকরী উপাদান নিয়ে যেগুলো চাইলে আপনার মিনিমাল স্কিন কেয়ার রুটিনে সহজেই রাখতে পারেন।

 

ভিটামিন সি

ভিটামিন সি হলো এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেটি ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনী রশ্নি বা ইউভি রে এর সরাসরি প্রভাব থেকে সুরক্ষিত রাখে। ভিটামিন সি দেয়া আছে এমন কোন সানস্ক্রিন যদি নিয়মিত ব্যবহার করা যায় তাহলে ট্যানিং এর সমস্যা অনেকটাই কম হবে। আবার এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান সমৃদ্ধ ভিটামিন সি জেল বেজড ফেইস ওয়াশ আমাদের পোরসে জমে থাকা ময়লা, অতিরিক্ত সিবাম দূর করতে সাহায্য করে। এতে একনি বা পিম্পলের সমস্যা কমে আসে। অয়েলি-একনি প্রোন স্কিনের জন্য জেল বেইজড ফেইস ওয়াশ ভালো কাজ করে। ভিটামিন সি আবার অনেকের স্কিনে দ্রুত মানিয়ে নেয় না আবার ড্রাই স্কিন আরো বেশি ড্রাই করে ফেলে, তাই সর্বনিম্ন ৫ থেকে ১০ মাত্রা দিয়ে ব্যবহার শুরু করলে ত্বক আস্তে ধীরে মানিয়ে নিতে শুরু করে। ভিটামিন সি কোলাজেন প্রোডকশন বুস্ট করে ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। মেছতা বা মেলাজমা কমাতে ভিটামিন সি জাতীয় ক্রিম বা সিরাম সেক্ষেত্রে অধিক কার্যকর ।

 

নিয়াসিনামাইড

স্কিন ফ্রেন্ডলি উপাদান হিসেবে নিয়াসিনামাইডের জনপ্রিয়তা শীর্ষে। অনেকে ত্বকের যত্ন শুরুই করেন নিয়াসিনামাইড সমৃদ্ধ স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট দিয়ে। নিয়াসিনামাইড যে কোন ধরনের ত্বকের সাথে খুব সহজেই মানিয়ে যায়। নিয়াসিনামাইড হলো ভিটামিন বি৩, যা স্কিনে সিবাম প্রোডাকশন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

নিয়াসিনামাইড কি সিবাম তাহলে একেবারে কমিয়ে ফেলে না?

উত্তরঃ না। সিবাম বা ত্বকের ন্যাচারাল অয়েল একেবারে সরে গেলে স্কিন অনেক বেশী ড্রাই হয়ে যা। স্কিনের পিএইচ লেভেল ইমব্যালেন্স হয়। ত্বকের এই অতিরিক্ত শুষ্কতা দূর করতে আমাদের স্কিন তখন বেশী পরিমাণে অয়েল প্রোডিউস করে। এতে স্কিন হয়ে যায় অয়েলি।

নিয়াসিনামাইড এই স্কিনের এই সিবাম প্রোডাকশন ঠিক রেখে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন- ড্রাইনেস, ডার্ক স্পটস কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। এছাড়াও নিয়াসিনামাইড এ আছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি প্রোপার্টিজ যা স্কিনে একনি, রেডনেস কার্যকরভাবে কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। সিরাম, সানস্ক্রিন এ নিয়াসিনামাইড খুব ভালো ভাবে কাজ করে। বিশেষ করে যাদের মেছতা বা মেলাজমা আছে কিন্তু স্কিন খুব বেশি সেনসিটিভ তারা নিয়াসিনামাইড ব্যবহার করতে পারেন। কারণ এর কনসেন্ট্রেশন বা মাত্রা যে কোন ধরনের ত্বকে মানানসই।

 

হায়ালুরোনিক অ্যাসিড

উচ্চ তাপমাত্রায় ত্বকের সুস্থতার জন্য হায়ালুরোনিক অ্যাসিড স্কিনের ডেইলি হাইড্রেশন হিসেবে খুব ভালো কাজ করে। রোদের প্রখরতায় ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। হায়ালুরোনিক অ্যাসিড বাতাস থেকে ত্বকে ১০০০ বার বেশী আর্দ্রতা বা ময়েশ্চারাইজেশন ধরে রাখতে সক্ষম। যা পরিবেশে থাকা অন্যান্য হিউমেকট্যান্ট এর তুলনায় ভালো কাজ করে। হায়ালুরোনিক অ্যাসিড ময়েশ্চারাইজেশনের সাথে সাথে আমাদের ত্বককে পরবর্তী ধাপের স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করে থাকে। এতে স্কিনে যে কোন ধরনের ট্রিটমেন্ট বা প্রোডাক্ট খুব ভালোভাবে কাজ করে। স্কিন সুইটেবল সানস্ক্রিনের সাথে হায়ালুরোনিক অ্যাসিড ব্যবহার করলে স্কিনে সান ড্যামেজ এর সমস্যা দূর হয়। ত্বক থাকে উজ্জ্বল ও মসৃণ।

 

 

উজ্জ্বল,সুস্থ ও সুন্দর ত্বক পেতে ত্বকের যত্নের কিন্তু কোন বিকল্প নেই। কিন্তু স্কিন কেয়ারে এতো এত অপশনের মধ্যে সঠিক উপাদান বেছে ব্যবহার করাটা বেশ কঠিন। কিন্তু সময় নিয়ে কিছু বিষয় লক্ষ্য রাখলে যে কোন আবহাওয়াতে ত্বক ভালো রাখা যায়। ত্বকের সুস্থতাই হোক তার আসল সৌন্দর্য। যত্নে থাকুক,আপনার সুন্দর ত্বক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *