BANGLA, Blog

কার্লি চুলের যত্ন

ত্বকের মতো আমাদের সবার চুলের ধরন কিন্তু সবার এক রকম হয় না। কারো চুল একদম সোজা বা স্ট্রেইট, আবার অন্যজনের কার্লি বা কোঁকড়া চুল। এই দুই ধরনের হেয়ার কেয়ার রূটিন কিন্তু ভিন্ন রকম। সোজা চুল অনেকটা ম্যানেজেবল হলেও, কোঁকড়া চুল একটু সময় বেশী নেয়। তাই এই ধরনের চুলের জন্যে চাই বাড়তি যত্নের।

আমেরিকান একাডেমি অফ ডার্মাটোলজি অ্যাসোসিয়েশন- কার্লি চুলের জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।

চলুন তা জেনে নেয়া যাক।

চুলে ঘন ঘন শ্যাম্পু না করা

কার্লি চুলে ঘন ঘন শ্যাম্পু করলে চুল রাফ এবং ম্যানেজ করা কঠিন হয়ে ওঠে। আপনার চুল যদি অনেক বেশী কার্লি হয় তাহলে সপ্তাহে ২-৩ বার শ্যাম্পু করে নিলেই যথেষ্ট। চুল যদি অনেক লম্বা হয় তাহলে সেকশন করে চুলে শ্যাম্পু করুন। শ্যাম্পু স্ক্যাল্পে ব্যবহার করলেও, কন্ডিশনার শুধুমাত্র চুলে ব্যবহার করতে হবে। স্ক্যাল্পে কন্ডিশনার ব্যবহার করলে ইরিটেশন শুরু হয় এবং তালু অনেক বেশী তৈলাক্ত হয়ে থাকে। এতে চুল পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

এই ধরনের চুলের জন্য সালফেট ফ্রি ময়েশ্চারাইজিং শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। শ্যাম্পু উপাদানের ক্ষেত্রে – আরগান, জোজবা, শিয়া বাটার কিংবা কোকনাট এর মতো ন্যাচারাল ইনগ্রেডিয়েন্ট বেছে নিতে পারেন। হেয়ার স্টাইলিং এর জন্য চুলে যদি

কন্ডিশনিং এর জন্য প্রোটিন কিংবা ইমোলিয়েন্ট আছে এমন ইনগ্রেডিয়েন্ট যুক্ত কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন। কার্লি বা কোঁকড়া চুলে সফটনেস ধরে রাখতে লিভ-ইন কন্ডিশনার বেশ ভালো কাজ করে।

চুল ময়েশ্চারাইজড রাখুন

কোঁকড়া বা কার্লি হেয়ার যাদের আছে তাদের চুল অন্যান্যদের তুলনায় বেশ রুক্ষ থাকে। তাই হেয়ার কন্ডিশনিং এর সময় থিক লেয়ারে অ্যাপ্লাই করুন। আবার অনেক সময় চুল শ্যাম্পু করতে গেলে জট লেগে থাকে। তাই শ্যাম্পু করার আগে চুল আঁচড়ে জট ছাড়িয়ে নিলে শ্যাম্পু-কন্ডিশনিং করতে অনেক সহজ হয়ে যায়। চাইলে কন্ডিশনার চুলে শ্যাম্পুর আগেও ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

স্ক্যাল্পের যত্ন নিন

ডিপ স্ক্যাল্প ক্লিঞ্জিং এর মানে হলো শ্যাম্পু ব্যবহার করা। তবে অনেকদিন যদি শ্যাম্পু করা না হয় তাহলে স্ক্যাল্প তৈলাক্ত হয়ে যায় এবং ময়লা জমে হেয়ার ফল শুরু হয়ে যায় ।  তাই সপ্তাহে ১-২ বার শ্যাম্পু ব্যবহার করুন । অনেক সময় খুশকির কারণে অ্যান্টি-ড্যান্ড্রাফ শ্যাম্পু পুরো চুলে ব্যবহার করলে চুল একদম রাফ হয়ে যায়। যেটা করতে হবে, অ্যান্টি-ড্যান্ড্রাফ শ্যাম্পু শুধুমাত্র স্ক্যাল্পে ২-১০ মিনিট রেখে দ্ভালো ধুয়ে ফেলুন। এরপর সম্পূর্ণ চুলে ময়েশ্চারাইজিং শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। চুলে খুব বেশী খুশকির সমস্যা হলে অবশ্যই ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী যে কোন অ্যান্টি-ড্যান্ড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।

 

 

চুলের ভালো মতো আঁচড়িয়ে নিন

কার্লি চুলে জট হয় বেশী। তাই চুল আঁচড়াতে মোটা দাঁতের কাঠের চিরুনি যদি ব্যবহার করলে ভালো। খুব শজে জট ছাড়াতে চুল হালকা পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিয়ে লিভ ইন কন্ডিশনার কিংবা সিরাম চুলের আগায় ম্যাসাজ করে নিন। এতে জট খুব সহজে খুলে আসবে।

সরাসরি সূর্যের আলো থেকে সুরক্ষিত থাকুন

সূর্যের অতিবেগুনী রশ্নি কার্লি হেয়ার ইজিলি ড্রাই করে ফেলে। তাই বাইরে বের হবার সময় ছাতা, স্কার্ফ, টুপি বা ওড়না দিয়ে চুল ঢেকে নিন।

ঘুমোতে যাবার আগে চুল বেঁধে নিন

চুল খোয়াল রেখে শুলে বালিশের কভারের সাথে ঘষা লেগে চুল ড্রাই হয় এবং বেশ ভালো হেয়ার ফল দেখা যায়। তাই রাতে ঘুমোতে যাবার আগে চুল হালকা বেণি করে বেঁধে নিন।

 

চুলের গঠন নির্ভর করে আমাদের হরমোন এবং ডিএনএ (DNA) এর ওপর । তাই একেক জনের চুলের ধরন একে রকম হয়। কোঁকড়ানো বা কার্লি চুলের যত্নে কিছুটা নিয়ম ও সতর্কতা প্রয়োজন। তাই উপরোক্ত উপায় মেনে চললে আপনার চুল সারাবছরই থাকবে কোমল ও মসৃণ। যত্নে থাকুক আপনার সুন্দর চুল ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *