Discover Natural Beauty Tips
কোরিয়ান গ্লাস স্কিন নাকি স্কিনে হেলদি গ্লো? কোনটি আসল ম্যাজিক?
এখন আমাদের কাছে সুন্দর স্কিনের মানেই হলো কোরিয়ান গ্লাস স্কিন । আর তার জন্য অনেক বড় একটি ইনভেস্টমেন্ট আমরা আমাদের স্কিন কেয়ারে করে থাকি। কিন্তু আসলেই কি ঠিক কোরিয়ানদের মতো আমাদের স্কিন একদম ফ্ললেস হবে?
আমাদের একটি বিষয় সব সময় মনে রাখতে হবে ত্বকের গঠন কিন্তু শুধু প্রসাধনী নির্ভর নয় আমাদের জেনেটিক স্ট্রাকচার ত্বকের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে । কোরিয়ানদের জেনেটিক স্ট্রাকচারে তাদের স্কিন হয় একদম ফ্ললেস। পোরস একদমই বোঝা যায়না। বাংলাদেশে আমাদের ত্বকের গঠন অন্যরকম হয়। প্রশ্ন আসতেই পারে কোরিয়ান প্রোডাক্ট ব্যবহার করলে এই রকম গ্লাস স্কিন কি আমাদের হবে না?
আসলে, ঠিক তাদের মতো হবে তা নয় । হ্যাঁ, তবে আমাদের স্কিন টেক্সচারের অনেক ইম্প্রুভমেন্ট দেখা যাবে । স্কিন হয় ব্রাইট।
চলুন আজকে সেট করি একটি কোরিয়ান স্কিন কেয়ার রুটিন রেগুলার স্কিন প্রোডাক্ট দিয়ে।
ডাবল ক্লিঞ্জিং
ফ্ললেস স্কিন পেতে প্রথম ধাপ হলো ডাবল ক্লিঞ্জিং। পরিবর্তিত পরিবেশে দূষণ এর কারণে ত্বকের গভীরতম স্তর ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আবার যখন সানস্ক্রিন অনেক লম্বা সময়ের জন্য স্কিনে থাকে তখন তা ঠিক মতো ডাবল ক্লিঞ্জিং না করলে পোরস ক্লগড হয়ে যায়। এতে স্কিনে একনি দেখা দেয়। এই ধরনের সমস্যা কমিয়ে আনতে মাইসেলার অয়েল কিংবা ওয়াটার দিয়ে প্রথমে মুখ ক্লিন করে এরপর স্কিন সুইটেবল ফেস ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে।
স্কিন এক্সফোলিয়েশন
স্কিনের পোরস যদি আনক্লগড থাকে তাহলে যে কোন ধরনের স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট স্কিনে দ্রুত অ্যাবজর্ব হয় এবং ভালোভাবে কাজ করে। তাই সপ্তাহে ১-২ বার স্কিনে স্যুট করে এমন এক্সফোলিয়েশন বেছে নিন।
টোনারের ব্যবহার
টোনার এর ব্যবহার ওভার হাইপড মনে হলেও এর বেনেফিশিয়ারি ফিচারস এড়িয়ে চলা একেবারেই ঠিক হবে না। ফেস ক্লিঞ্জিং এর পর টোনার স্কিনের পিএইচ (pH) ব্যালেন্স ঠিক রাখতে সাহায্য করে। ডাবল ক্লিঞ্জিং পোরস ওপেন করে, টোনার পোরস ক্লোজ করে স্কিনে ময়েশ্চার ধরে রাখতে সাহায্য করে। এতে স্কিন টেনে ধরার ভাবটা থাকেনা।
ত্বকে এসেন্স এর ব্যবহার
কোরিয়ান স্কিন কেয়ার রুটিনে জনপ্রিয় এডিশন হলো এসেন্স। এসেন্স এক ধরনের ওয়াটার বেজড প্রোডাক্ট যেটি স্কিনে এক্সেসিভ ওয়াটার লস প্রিভেন্ট করে ময়েশ্চার লক করতে সাহায্য করে। স্কিনের টেক্সচার স্মুদ হলে এক ধরনের হেলদি গ্লো দেখা যায়। স্কিন টোন হয় ইভেন ।
সিরাম
সিরাম হাইড্রেশনের সাথে সাথে আমাদের ত্বকের কিছু নির্দিষ্ট সমস্যা যেমন- একনি, এনলার্জ পোরস , প্যাচি স্কিন, রিংকেলস, ফাইন লাইন্স ও হাইপারপিগমেন্টেশন কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। সিরামে বিভিন্ন অ্যাক্টিভ উপাদান যেমন- হায়ালুরোনিক অ্যাসিড, নিয়াসিনামাইড, স্যালিসিলিক এর মতো ইনগ্রেডিয়েন্টস পোটেন্ট বা শক্তিশালী ভাবে থাকে। তাই অবশ্যই তা নির্দিষ্ট মাত্রা বা কনসেন্ট্রেশন অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে।
বাদ যাবে না রেগুলার ময়েশ্চারাইজার
স্টেপ বাই স্টেপ এতো কিছু ব্যবহারের পর কি আসলেই কি এখন আবার ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে?
উত্তরঃ হ্যাঁ, এতোক্ষণ স্কিনে যা কিছু ব্যবহার করা হলো তা ভালোভাবে কাজ করতে এবং স্কিন ডিপলি ময়েশ্চারাইজ রাখতে রেগুলার স্কিন সুইটেবল ময়েশ্চারাইজার এর ব্যবহার মাস্ট। তাই ত্বকের শুষ্কতা ও হেলদি গ্লো ধরে রাখতে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
শীট মাস্ক?
কোরিয়ান বিউটি ট্রেন্ড এ কনভেনিয়েন্ট ও ইন্সট্যান্ট হাইড্রেটর বলতে আমাদের সবার পছন্দ এখন শীট মাস্ক । সপ্তাহে ১-২ বার স্কিনে শীট মাস্ক ব্যবহার করলে স্কিন হয় সফট ও হাইড্রেটেড। সবচেয়ে ভালো হয় গরমের সময় যদি শীট মাস্ক নরমাল রেফ্রিজারেশনে রেখে ব্যবহার করা হয়। তাহলে এটি পোরস মিনিমাইজেশনে সাহায্য করে, সেই সাথে স্কিন রিফ্রেশড ও রিল্যাক্সড ফিল হয়।
গ্লাস স্কিন এর কথা চিন্তা করে সব ধরনের কোরিয়ান স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার শুরু করলে স্কিনে কিন্তু আবার অন্যরকম রিঅ্যাকশান দেখা দিতে পারে। কারণ ত্বক সব ধরনের প্রোডাক্ট মানিয়ে নিতে পারে না। আর একটি বিষয় হলো আমাদের সবার ত্বকের গঠন এক রকম হয় না। তাই কোরিয়ান প্রোডাক্ট ব্যবহার করলেই যে স্কিন একদম কোরিয়ানদের মতো হয়ে যাবে তা কিন্তু না। এই ধাপ গুলো অনুসরণ করলে আমরা আমাদের ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা এবং সুস্থতা ধরে রাখতে পারবো। সেটিই মূলত আসল বিষয়। সুস্থ থাকুক আপনার সুন্দর ত্বক।