BANGLA, Blog

গর্ভবতী মায়ের স্কিন কেয়ার রুটিন

একজন নারীর জীবনে মা হওয়ার প্রতিটি মুহুর্ত হয় সবচেয়ে সুন্দর। অনাগত সন্তানের স্বাস্থ্য নিয়ে মায়েদের চিন্তার কোন শেষ নেই। তবে এই সময় মায়ের স্বাস্থ্যের দিকেও ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে খাবার কিংবা ঘুমের রুটিন এসব কিছুর পরিবর্তনের সাথে সাথে ত্বকের ধরনেরও পরিবর্তন আসে। তবে অন্যান্য দিনে, যে ধরনের বেসিক স্কিন কেয়ার করা হয় তার থেকে মিনিমাল রাখা হয় প্রেগনেন্সির সময় স্কিন কেয়ার রুটিন।

এই সময় অনেক মায়েরাই আসলে চিন্তায় থাকেন স্কিন কেয়ারে কি ধরনের অ্যাক্টিভ স্কিন কেয়ার ব্যবহার করলে স্কিনে কোনরকম সমস্যা হবে না।

তাই আজকের এই লেখায় থাকছে কেমন হবে গর্ভবতী মায়েদের স্কিন কেয়ার রুটিন।

কি কি উপাদান ব্যবহার থেকে বিরত থাকবেন?

এই বিশেষ সময় স্কিন কেয়ারে অবশ্যই সব কিছু সাবধানে ব্যবহার করতে হবে। কারণ সব ধরনের অ্যাক্টিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা যায় না। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে এই ৫ ধরনের অ্যাক্টিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন সমস্যার কারণ হতে পারে।

 

  • রেটিনল
  • ভিটামিন এ
  • হাইড্রোকুইনোন
  • আলফা আরবুটিন
  • বেনজয়েল পারক্সাইড

 

গর্ভবস্থায় স্কিন কেয়ার রুটিন

ক্লিঞ্জার

ফেইস ওয়াশ বা ক্লিঞ্জার এমন বেছে নিতে হবে যেটি একই সাথে স্কিন সুইটেবল এবং সেই সাথে স্কিন ফ্রেন্ডলি ইনগ্রেডিয়েন্ট যেমন- হায়ালুরোনিক অ্যাসিড, নিয়াসিনামাইড ফর্মুলেটেড আছে এমন ক্লিঞ্জার বা ফেইস ওয়াশ ব্যবহার করুন। স্কিন যদি একনি বা পিম্পল বাম্পস এর সমস্যা থাকে তাহলে স্বল্প মাত্রায় (২% বা তার চেয়েও কম মাত্রার) স্যালিসিলিক অ্যাসিড যুক্ত ফেইস ওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন। তবে এই সময় শারীরিক জটিলতার কারণে স্যালিসিলিক এর পরিবর্তে অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ টি ট্রি ক্লিঞ্জার ব্যবহার করুন। ড্রাই স্কিনের ক্ষেত্রে পিএইচ লেভেল ব্যালেন্সড আছে এমন ক্লিঞ্জার বা ফেইস ওয়াশ স্কিন অভারড্রাই করে না। অন্যদিকে ড্রাই স্কিনে হায়ালুরোনিক অ্যাসিড স্কিন ময়েশ্চারাইজিং এর কাজ করে। এখন স্কিন যদি সেনসিটিভ হয়, তাহলে ফ্রেগ্রেন্স ফ্রি ও গ্লিসারিন যুক্ত ফেইস ওয়াশ , সোপ কিংবা ক্লিঞ্জার ব্যবহার করুন।

 

সিরাম

স্কিনে স্পেসিসিফ কিছু সমস্যার জন্যে কেয়ারে আমরা আমাদের স্কিনে নির্দিষ্ট মাত্রায় সিরাম ব্যবহার করি। এই সময় ভিটামিন সি, নিয়াসিনামাইড, অ্যাজেলেইক অ্যাসিড, হায়ালুরোনিক অ্যাসিড আছে এমন সিরাম ব্যবহার করুন। তবে স্কিনে খুব বেশী ইরিটেশন বা সমস্যা থেকে থাকে তাহলে শুধুমাত্র হায়ালুরোনিক আছে এমন সিরাম ব্যবহার করে দেখতে পারেন। গর্ভাবস্থায় ডার্ক স্পটস ও অ্যান্টি-এজিং এর জন্য রেটিনল ও আলফা আরবুটিন এর পরিবর্তে ভিটামিন সি এবং একনির জন্য অ্যাজেলেইক অ্যাসিড আছে এমন সিরাম ব্যবহার করলে সবচেয়ে ভালো। যে কোন ধরনের স্কিন লাইটেনিং এজেন্ট শিশুর জন্মের সময় নানা রকম শারীরিক জটিলতার কারণ হিসাবে দেখা দিতে পারে।

 

ময়েশ্চারাইজার

মিনিমাল স্কিন কেয়ারে স্কিন হাইড্রেশন এর বিকল্প নেই। তাই স্কিনের জন্য জেন্টাল অ্যান্ড হাইড্রেটিং এজেন্ট যেমন- অ্যালোভেরা, হায়ালুরোনিক অ্যাসিড, সেরামাইড যুক্ত ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করুন। স্কিন যদি খুব বেশী অয়েলি হয়ে থাকে সুদিং জেল হতে পারে একটি অল্টারনেটিভ চয়েস।

 

সানস্ক্রিন

হেলদি স্কিনের জন্য একটা স্ট্রং বেইজ হলো সানস্ক্রিন। আন ইভেন স্কিন টোন, সান স্পটস থেকে মুক্তি পেতে সানস্ক্রিনের কোন বিকল্প নেই। তবে ডাক্তাররা এই সময় কেমিক্যাল সানস্ক্রিনের পরিবর্তে ব্রড স্পেকট্রাম যুক্ত মিনারেল সানস্ক্রিন ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ব্রড স্পেকট্রাম সানস্ক্রিনে জিঙ্ক অক্সাইড ও টাইটেনিয়াম ডাই অক্সাইড থাকে যা সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনী রশ্নি রিফ্লেক্ট করে দেয়, এতে এই রশি ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনা। অন্যদিকে কেমিক্যাল সানস্ক্রিন এই রশ্নি স্কিনে অ্যাবজোর্ব করে ফেলে । এতে স্কিনে অনেক সময় রেডনেস, ইরিটেশন অথবা অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে।

যাদের একনি , মেলাজমা এর সমস্যা আছে তারা খুব সহজেই মিনারেল বেজড সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারেন।

 

জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে শারীরিক নানা পরিবর্তন স্বাভাবিক । অনেক সময় নতুন মায়েরাও এই পরিবর্তন বুঝে উঠতে পারেন না। আবার গর্ভাবস্থায় নানা রকম শারীরিক জটিলতা থাকতে পারে। তাই যে কোন ধরনের স্কিন কেয়ার ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই ইনগ্রেডিয়েন্টস গুলোর সাথে অবশ্যই ডাক্তারি পরামর্শ গ্রহণ করুন। যত্নে থাকুক আপনার সুন্দর ত্বক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *