Discover Natural Beauty Tips
ত্বকে অতিরিক্ত ঘাম? মেনে চলুন কিছু সহজ টিপস
পরিবর্তনশীল আবহাওয়া, পরিবেশ কিংবা সময় সব কিছুর সাথেই নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়। শরীরের সবচেয়ে বড় অঙ্গ আমাদের ত্বক এই ব্যাপারে সবচেয়ে বড় দ্বায়িত্ব পালন করে। তাই তার সুস্থতা আমাদের বেঁচে থাকার প্রথম অগ্রাধিকার।
সময়ের সাথে সাথে গরমে তাপমাত্রার বিস্তর পরিবর্তন এসেছে। সূর্যের প্রখরতার সাথে সাথে বাতাসে আর্দ্রতার উপস্থিতি এই তাপমাত্রায় শরীর ঘেমে যায় এবং চরম অস্বস্তি অনুভূত হয়।
অনেক বেশী টাকা খরচ কিংবা খুব বেশী সমস্যা না হলে প্রতিদিনের রুটিনে কিছু পরিবর্তন আনলে গরমে স্কিন ইরিটেশন কমে আসে।
চলুন দেখে নেয়া যাক কিছু স্কিন রিল্যাক্সিং কিছু ইজি হ্যাকস
হালকা আরামদায়ক কাপড় ব্যবহার করুন
তীব্র গরমে সিনথেটিক, খসখসে, কালো রঙ এর কিংবা বেশী আঁটসাঁট জামা পড়া থেকে বিরত থাকুন। এই ধরনের কাপড় সূর্যের তাপ জামার ভেতরে আটকে ফেলে। ঠিকমত বাতাস চলাচলের খুব বেশী সুযোগ না থাকায় শরীর অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়। শরীরের এই বাড়তি তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে ঘাম শুরু হয়। এতে স্কিনে অয়েল প্রোডাকশন বেশী হয় এবং ত্বকে বাতাসে থাকা ধুলো-ময়লা জমে যায়। অনেক সময় স্কিনে হিট র্যাশ কিংবা পিম্পল দেখা যায়। তাই অতিরিক্ত গরমের সময় হালকা রঙ এর সুতির ঢিলেঢালা জামা পরুন।
গোসল করে নিন
সম্ভব হলে বাইরে কাজে বের হবার আগে গোসল করে নিন। এতে বাইরে গেলে অস্বস্তি ভাব অনেকটা কমে আসবে। গোসল করে বের হলে ঘেমে যাওয়ার প্রবণতা অনেকটা কমে আসে। অতিরিক্ত গরম পানি দিয়ে গোসল করা একদম এড়িয়ে চলুন। গোসলে কম ক্ষারযুক্ত সাবান কিংবা শাওয়ার জেল ব্যবহার করুন।
লাইট ওয়েট ক্রিম বা জেল এর ব্যবহার
এখন আবহাওয়া যেমনই হোক স্কিন কেয়ার তো আর স্কিপ করা যাবে না। তাই প্রতিদিনের রুটিনে স্কিন টাইপ অনুযায়ী লাইট ওয়েট ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। জেল ফর্মুলেশনের ক্রিম বা লোশন সেক্ষেত্রে খুব ভালো কাজ করবে। সুদিং জেল স্কিন ময়েশ্চারাইজিং এ একটি বেস্ট অপশন। সবচেয়ে ভালো হয় এই ধরনের জেল ফ্রীজে রেখে যদি ব্যবহার করা যায়। তাহলে গরম থেকে আসার পর ব্যবহার করলে স্কিন অনেকটা রিল্যাক্সড থাকে এবং রেডনেস কমে আসে।
সানস্ক্রিন
বলার অপেক্ষা রাখেনা এই গরমে সূর্যের তীব্রতা থেকে বাঁচতে সানস্ক্রিন এর ব্যবহার কতটা গুরুত্বপূর্ণ। সান এক্সপোজারে ইউভি রেডিয়েশনের কারণে আমাদের স্কিন হয়ে যায় ট্যানড এবং সেনসিটিভ। তাই স্কিন টাইপ বুঝে নন-স্টিকি ও ম্যাট ফিনিশ দেয় এমন ভালো এসপিএফ সহ ব্রড স্পেকট্রাম যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। ব্রড স্পেকট্রাম যুক্ত সানস্ক্রিন স্কিনে হিট ট্র্যাপ করে ঘাম দেয় না অর্থাৎ ইউভি রে ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না এবং স্কিন লাইট ওয়েট ও কমফোর্টেবল ফিনিশ দেয় ।
তাই অতিরিক্ত ঘেমে যাওয়ার সমস্যা তুলনামূলক কম থাকে। তারপরেও যদি খুব বেশী ঘাম আসে তাহলে সানস্ক্রিন ব্যবহারের পর স্কিন ফ্রেন্ডলি ফেইস পাউডার দিয়ে ড্যাব করে নিতে পারেন। এতে ঘাম কম হবে।
হিট র্যাশ কমিয়ে আনুন
শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত হলে ঘাম শুরু হয়। এতে আমাদের ত্বকের গ্রন্থি বা পোরস বন্ধ হয়ে স্কিনে ছোট ছোট বিচির মতো র্যাশ শুরু হয়। এই ধরনের সমস্যায় প্রিকলি হিট পাউডার ব্যবহার করলে হিট র্যাশে চুলকানো ভাব অনেকটা কমে আসে।
খাবারের দিক লক্ষ্য রাখুন
শুধুমাত্র প্রসাধনী ব্যবহারের ক্ষেত্রে নয় আমাদের উচিৎ খুব বেশী তৈলাক্ত, ঝাল বা মশলা জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা। এই ধরনের খাবার আমাদের সোয়েট গ্ল্যান্ড কে ট্রিগার করে এতে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং অনেক বেশী ঘাম শুরু হয় । প্রচুর পরিমাণে পানি তো খেতে হবেই সেই সাথে ডাবের পানি কিংবা কমলা বা যে কোন ধরনের তাজা ফলের রস এবং শরীর ঠান্ডা রাখে এমন সবজি যেমনঃ লাউ, শসা, পাতলা ডাল ইত্যাদি খাবার চেষ্টা করবেন।
সাপ্তাহিক এক্সফোলিয়েশন করুন
অতিরিক্ত ঘেমে যাওয়ার কারণে আমাদের পোরসে ময়লা জমে যায় সেই সাথে আমাদের ত্বকের মৃতকোষ জমা হয়ে পোরস ক্লগড হয়ে যায়। এতে স্কিনে র্যাশ কিংবা পিম্পলের সমস্যা দেখা যায়। তাই পোরস ক্লিন রাখতে সপ্তাহে ১-২ বার স্কিন এক্সফোলিয়েট করুন। অতিরিক্ত ঘাম কমিয়ে আনতে অ্যান্টিপারস্পিরেন্ট রোল অন ব্যবহার করুন। এতে ঘাম ও দুর্গন্ধ অনেকটাই কমে আসবে।
আবহাওয়ার সাথে আমাদের প্রতিনিয়তই মানিয়ে নিতে হচ্ছে যার পরিবর্তন সব সময়ের জন্য। তাই আবহাওয়ার সাথে সমন্বয় রেখেও আমাদের ত্বকের দিক খেয়াল রাখতে হবে। আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে নেই তবে ত্বকের যত্নে খুব সহজ কিছু একটু রুটিন করে নিলে আপাতত এই গরম থেকে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায়।