স্কিন কেয়ারে নতুন ট্রেন্ড – স্কিন সাইক্লিং

রুপচর্চায় সময়ের সাথে বিবর্তনের ধারা চলমান।  স্কিন কেয়ারে যেমন বাড়ছে বিভিন্ন প্রোডাক্ট ভেরিয়েশন তেমনি, স্কিন কেয়ার রুটিনেও আসছে পরিবর্তন। এই বেশ কিছু দিন আগেও আমরা মিনিমাল সানস্ক্রিন ব্যবহারে অভ্যস্ত ছিলাম না। আর এখন সবাই আমরা বুঝতে পারছি এর প্রয়োজনীয়তা কতটুকু। আবার দেখা যায় সময়ের সাথেও স্কিন কেয়ার এর কিছু প্রসেস জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। স্কিন সাইক্লিং সেই ধারাবাহিকতারই একটি অংশ।

স্কিন সাইক্লিং আসলে কি?

আমাদের ত্বকে নানা কারণে বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায় । স্কিন ইম্প্রুভমেন্ট এর জন্য আমরা অনেক সময় হাই কন্সেট্রেশনের প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে চাই। এই ধরনের অ্যাক্টিভ উপাদান একবারে অনেক ব্যবহার করলে স্কিন রিঅ্যাক্ট করতে পারে। তাই এই উপাদানগুলোকে একটি রুটিনের মাধ্যমে কোন স্কিনে প্রকার ড্যামেজ ছাড়াই ধীরে ধীরে অ্যাডজাস্ট করানোর এই প্রসেসকেই বলা হয় স্কিন সাইক্লিং।

স্কিন সাইক্লিং এর প্রসেস কি?

স্কিন সাইক্লিং প্রসেস সাধারণত ৪ দিনের একটি সাপ্তাহিক সাইকেল এ চলতে থাকে।

১. ১ম দিন – এক্সফোলিয়েশন

প্রথমে স্কিন সুইটেবল ও জেন্টাল ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এরপর AHA(Alpha Hydroxy Acid) বা BHA (Beta Hydroxy Acid) যুক্ত ক্যামিকাল এক্সফোলিয়েশন ব্যবহার করে স্কিন এক্সফোলিয়েট করে নিন। এরপর আপনার পচ্ছন্দের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এটি আপনার স্কিনের ডেড স্কিন সেল রিমুভ করে স্কিন ব্রাইট ও হেলদি রাখতে সাহায্য করে।

২. ২য় দিন – অ্যাক্টিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট এর ব্যবহার

২য় দিনে স্কিনের সমস্যা অনুযায়ী নির্দিষ্ট মাত্রার অ্যাক্টিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট যুক্ত প্রোডাক্ট যেমন – ভিটামিন সি, রেটিনল, নিয়াসিনামাইড কিংবা স্যালিসিলিক যুক্ত সিরাম, এসেন্স, ক্রিম বা ট্রিটমেন্ট ব্যবহার করুন। এরপর রেগুলার ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

৩. ৩য় দিন – স্কিন রিপেয়ারিং 

৩য় দিন হচ্ছে স্কিন হিলিং ডে। এই সময় গত দিনে ব্যবহারিত প্রোডাক্ট স্কিনে ইফেক্টিভলি কাজ করে যাচ্ছে। এই হিলিং প্রসেস কে আরো বুস্ট করতে এই সময় মাইল্ড ইনগ্রেডিয়েন্ট যুক্ত  সেরামাইড ও অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেন্টরি প্রোপার্টিজ যেমন – অ্যালোভেরা কিংবা গ্রীন টি আছে এমন শীট মাস্ক, ফেসিয়াল অয়েল কিংবা সুদিং জেল ব্যবহার করুন।  এটি স্কিন ইরিটেশন কময়ে আনে এবং ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রেখে ফ্রি-রেডিক্যাল ড্যামেজ থেকেও স্কিনকে সুরক্ষিত রাখে ।

৪. ৪র্থ দিন – স্কিন রিকোভারিং 

এই দিন স্কিনে বেসিক স্কিন কেয়ারে লাস্ট স্টেপ হিসেবে সেরামাইডস ও হায়ালুরোনিক যুক্ত স্কিন সুইটেবল ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। ৫ম দিন থেকে আবার এই সেম সাইকেল রিপিট করুন। একটি জিনিস অবশ্যই মনে রাখতে হবে , যেহেতু আমাদের স্কিন এক্সফোলিয়েশন ও অ্যাক্টিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট ব্যবহারের বিভিন্ন ধাপ পেড়িয়ে আসে সেক্ষেত্রে দিনের বেলা বাহিরে যাওয়ার আগে অবশ্যই ভালো এসপিএফ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।

এই সময়ে করণীয়

• অন্তত ৭-৯ ঘন্টার ঠিকমতো বিশ্রাম নিন।
• প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
• অতিরিক্ত স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।

সব ধরনের প্রোডাক্ট ত্বকে একবারেই দীর্ঘস্থায়ী সমাধান দিতে পারবে ব্যাপারটি আসলে তেমন নয়।কারণ আমাদের ত্বক যে কোন ধরনের প্রোডাক্ট অ্যাডজাস্ট করে নিতে কিছুটা সময় নেয়। আর ত্বকের সুস্থতা তখনি ধরে রাখা সম্ভব যখন পরিমাণ অনুযায়ী স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট একটি নির্দিষ্ট রুটিনের মধ্য দিয়ে ব্যবহার করা হয়। তাই স্কিন সাইক্লিং- উপাদানের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে, ত্বকে একটি দীর্ঘমেয়াদী সুস্থতা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম।