BANGLA, Blog

স্কিন কেয়ারে ৫ টি জনপ্রিয় অ্যাক্টিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট

নিজের প্রতি যত্ন নেয়ার বিষয়টি আসলে সবার আগে আমরা চিন্তা করি কিভাবে আমাদের ত্বক সুস্থ ও সুন্দর রাখা যায়। আগে এক সময় মনে করা হতো গায়ের রঙ ফর্সা হলেই আপনি সুন্দর। কিন্তু যুগের পরিবর্তনের সাথে আমাদের চিন্তা ধারাতেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। মানুষভেদে গায়ের রং যেমনি হোক, ত্বক সুস্থ রাখাটা এখন গুরুত্বপূর্ণ। তাই নিজের স্কিন কেয়ারে কোন কম্প্রমাইজ নয়। যদিও আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম নিজে থেকেই ত্বকের ক্ষত সারিয়ে তুলতে পারে, কিন্তু পরিবেশগত কারণ এবং সময়ের সাথে সাথে আমাদের ত্বকের এই কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকে।

এবং ঠিক তখনই কাজে আসে কিছু স্কিন ফ্রেন্ডলি অ্যাক্টিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস। অ্যাক্টিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস হলো এক ধরনের সক্রিয় উপাদান যেগুলো ত্বকে নির্দিষ্ট সমস্যা যেমন- একনি, এনলার্জ পোরস, ডার্ক স্পটস, রেডনেস কমাতে ইফেক্টিভলি কাজ করে। এই ধরনের সক্রিয় উপাদান বা অ্যাক্টিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট লোশন, সিরাম কিংবা ক্রিমে দেখতে পাওয়া যায়।

কিন্তু এতো অ্যাক্টিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় কোনগুলো, যেগুলো মোটামুটি সব ধরনের স্কিনের সাথে মানিয়ে যাবে?

চলুন দেখে নেয়া যাক স্কিন কেয়ারে ৫ টি জনপ্রিয় অ্যাক্টিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট

হায়ালুরোনিক অ্যাসিড

হায়ালুরোনিক অ্যাসিড তার জেন্টাল নেচারের জন্য স্কিন কেয়ারে একটি বিখ্যাত ইনগ্রেডিয়েন্ট। এটি ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখতে এক ধরনের শক্তিশালী হিউমেকট্যান্ট হিসেবে কাজ করে। যদি বলা হয় হায়ালুরোনিক অ্যাসিড স্কিনের জন্য একটি আইডিয়াল ময়েশ্চারাইজার তাহলে ভুল হবে না। স্কিন টাইপ যেমনই হোক না কেনো, হায়ালুরোনিক অ্যাসিড অয়েলি, ড্রাই, কম্বিনেশন কিংবা সেনসিটিভ সব ধরনের ত্বকের যত্নে ব্যবহার করা যায়। হায়ালুরোনিক অ্যাসিড টিন এইজ থেকেই শুরু করা যায়। হায়ালুরোনিক অ্যাসিড স্কিনে ময়েশ্চার ধরে রেখে, স্কিন ইলাস্টিসিটি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এতে ত্বকে রিংকেলস ও ফাইন লাইনসের সমস্যা কমে আসে। স্কিন থাকে হেলদি অ্যান্ড সফট ।

 

নিয়াসিনামাইড

নিয়াসিনামাইড হলো ভিটামিন বি-৩ এর আরেক রুপ। এটি স্কিন টোন ইম্প্রুভ করতে সাহায্য করে। বয়স কিংবা হরমোনাল একনির কারণে স্কিনে অনেক সময় পোরস বড় হয়ে যায়। এই এনলার্জ পোর মিনিমাইজেশনে নিয়াসিনামাইড ইফেক্টিভলি কাজ করে। নিয়াসিনামাইড ত্বকে অতিরিক্ত সিবাম প্রোডাকশন কন্ট্রোল করতে সাহায্য করে। এতে স্কিনে অয়েলিনেস এবং একনি হওয়ার প্রবণতা অনেকটা কমে আসে। এটি পিগমেন্টেশন কমিয়ে স্কিন টোন ইভেন করতেও সহায়ক। নিয়াসিনামাইড সব ধরনের স্কিনে ব্যবহার করা হলেও, অয়েলি স্কিনের বিভিন্ন সমস্যায় এটি ভালো কাজ করে।

 

ভিটামিন সি

ডালনেস অথবা সান ড্যামেজ কমিয়ে এনে ভেতর থেকে স্কিন গ্লোয়িং করতে ভিটামিন সি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ভিটামিন সি তার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণাবলির জন্য বেশ সুপরিচিত। ভিটামিন সি কোলাজেন প্রোডাকশন বৃদ্ধি করে ডার্ক স্পটস ও হাইপারপিগমেন্টেশন কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। এছাড়াও ভিটামিন সি ত্বককে বিভিন্ন ফ্রী রেডিক্যাল ড্যামেজ যেমন- ময়লা, ধুলোবালি ও পরিবেশে হওয়া বিভিন্ন দূষণ থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন সি নরমাল, অয়েলি ও সেনসিটিভ স্কিনের জন্য সুইটেবল হলেও এটি ড্রাই স্কিন ইরিটেট করে অভারড্রাই করে দিতে পারে। তাই এক্সট্রিম ড্রাই স্কিনে ভিটামিন সি সরাসরি ব্যবহার না করাই ভালো। তাই ভিটামিন সি বিগেনার ফ্রেন্ডলি কনসেন্ট্রেশন এর সাথে হায়ালুরোনিক কিংবা অন্য কোন ময়েশ্চারাইজিং এজেন্ট দিয়ে ফর্মুলেটেড হয়, তাহলে সেটি ড্রাই স্কিনের ভালো কাজ করবে।

 

স্যালিসিলিক অ্যাসিড

স্যালিসিলিক অ্যাসিড মূলত বিটা হাইড্রোক্সি অ্যাসিড (BHA) যাকে আমরা মূলত স্কিন এক্সফোলিয়েটিং এজেন্ট হিসাবে চিনি। স্যালিসিলিক অ্যাসিড এক ধরনের জেন্টাল স্কিন এক্সফোলিয়েটর। এটি স্কিনে ডেড স্কিন সেল রিমুভ করতে সাহায্য করে। অনেকে একনি প্রোন স্কিনে ইরিটেশনের জন্য ফিজিক্যাল স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন না, আবার অনেক সময় ক্যামিকাল পিলিং নিয়েও সংকোচ করে থাকেন। তাদের জন্য বেস্ট একটি চয়েস হতে পারে স্যালিসিলিক অ্যাসিড যুক্ত যে কোন ধরনের স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট। স্যালিসিলিক অ্যাসিড স্কিনে পোরস আনক্লগ করে একনি কমিয়ে আনতেও সাহায্য করে। এতে স্কিন থাকে সফট অ্যান্ড ফ্ললেস।

রেটিনল

উপরে যত গুলো অ্যাক্টিভ স্কিন ইনগ্রেডিয়েন্ট নিয়ে কথা হলো তার মধ্যে সবচেয়ে স্ট্রং ইনগ্রেডিয়েন্ট হলো রেটিনল। রেটিনল সাধারণত বিভিন্ন সাইন্স অফ এজিং যেমন- ডেড স্কিন সেল, রিংকেলস ও ফাইন লাইনস কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। এটি অয়েলি স্কিনে সিবাম প্রোডাকশন কন্ট্রোল করে একনি কমিয়ে আনে। তবে অন্যান্য অ্যাক্টিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট এর মতো রেটিনল রেগুলার স্কিনে ব্যবহার করা একটু কঠিন। রেটিনল স্কিনে অ্যাডজাস্ট হতে কিছুটা সময় নেয়। তাই শুরুর দিকে রেটিনল স্কিনে সপ্তাহে ১-২ বার অল্প পরিমাণে ব্যবহার করুন । স্কিনে একেবারে অ্যাডজাস্ট হয়ে গেলে ১ দিন পর পর কিংবা প্রতিদিন ব্যবহার করা যায়। যেহেতু রেটিনলের স্পেসিফিক কন্সার্ন হলো ভিজিবল এজিং সাইনস কমিয়ে আনা তাই এটি ২০-২৫ বছর বয়সের পর থেকে ব্যবহার শুরু করলে সবচেয়ে ভালো।

 

সহজ কথায় বলতে গেলে এই সব গুলো ইনগ্রেডিয়েন্ট মোটামুটি সব ধরনের স্কিন টাইপের সাথে অ্যাডজাস্ট হয়ে যায়। তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, এই সব ইনগ্রেডিয়েন্টস একেবারে একসাথে ব্যবহার শুরু করলে তার কার্যকারিতা ত্বকের যত্নে কতটুকু কার্যকর হবে তা নিয়ে সংশয় থেকে যায়। তাই স্কিন টাইপ বুঝে একই সময়ে যে কোন একটি নির্দিষ্ট সমস্যার জন্য এই ধরনের ইনগ্রেডিয়েন্ট ব্যবহার করা ভালো। এতে স্কিন ভালো থাকবে লম্বা সময়ের জন্য। তাই নিয়ম মেনে এই ধরনের অ্যাক্টিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট ব্যবহার করুন। যত্নে থাকুক আপনার সুন্দর ত্বক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *