BANGLA, Blog

চুলের পোরসিটি কি? কেমন হবে সেই চুলের যত্ন?

সুন্দর চুল, ভালো মন, আর তাহলেই তো ভালো দিন! এই ভেবেই আমরা আমাদের চুলের জন্য সবসময় ভালো কিছু ব্যবহার করার চেষ্টা করি। একটি বিষয় সব সময় খেয়াল রাখা দরকার ত্বকের মতো চুলের ও কিন্তু বিভিন্ন ধরন আছে। যদি সেই অনুযায়ী তার যত্ন নেয়া যায় তাহলে চুল সব সময় ভালো থাকবে। বয়স কিংবা পারিপার্শ্বিক আবহাওয়া, এই সব কিছুর প্রভাব আমাদের চুলে পরিলক্ষিত হয়। চুলের জন্য কি ধরনের পণ্য বেছে নিতে হবে তা কিন্তু অবশ্যই চিন্তার কারণ। কোন ধরনের চুলের জন্য ঠিক কি ধরনের হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট বেছে নিতে হয় তা নির্ভর করে চুলের পোরোসিটির ওপর।

চুলের সঠিক যত্নের জন্য চুলের পোরোসিটি জানার গুরুত্ব কতটুকু চলুন তা জেনে নেয়া যাক

চুলের রন্ধ্র বা হেয়ার পোরোসিটি কি?

চুলে আর্দ্রতা ভালোভাবে ধরে রাখতে ত্বকের মতো আমাদের চুলেও ছোট ছোট ছিদ্র আছে। যার মধ্য দিয়ে চুলের উপরি স্তর অর্থাৎ হেয়ার কিউটিকেলস এ আর্দ্রতা এবং চুলে ব্যবহারিত তেল কতটুকু কাজ করছে তা নির্ধারণ করা হয়। চুলের ধরণ যেমনই হোক তা ময়েশ্চারাইজড না থাকলে চুল হয়ে যায় শুষ্ক ও রুক্ষ। চুলের এই পোরোসিটির গঠন সাধারণত বংশগত হয়ে থাকে। চুলের পোরোসিটির এই সুক্ষতা চুলে বিভিন্ন ক্যামিকেলের ব্যবহার কিংবা পরিবেশগত কারণে কম বেশি হতে পারে। তাই হেয়ার কেয়ার রুটিন সবার চুলের জন্য এক ধরনের হয় না ।

হেয়ার পোরসিটি সাধারণত ৩ ধরনের হয়ে থাকে-

লো পোরসিটি হেয়ার

এই ধরনের চুলের ওপর স্তর বা হেয়ার কিউটিকেলস বেশ শক্ত ও কঠিন হয়ে থাকে। চুলে ব্যবহারিত তেল বা শ্যাম্পুর গুণাগুণ চুলের ভেতরে ঢুকতে পারে না। ওপর থেকেই ধুলে সরে যায়। এই ধরনের চুল আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে না। প্রয়োজনীয় পুষ্টি গুণের অভাবে চুল হয়ে ওঠে রুক্ষ এবং চুল পড়া তখন হয়ে যায় আরও সহজ।

তাই এই ধরনের চুলে হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে গ্লিসারিন, মধু, জোজবা অয়েল, আরগান অয়েল কিংবা অ্যালোভেরা সমৃদ্ধ প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে হবে। রেগুলার হেয়ার কন্ডিশনিং এর পাশাপাশি যে কোন হাইড্রেটিং হেয়ার মাস্ক সপ্তাহে ১-২ বার হেয়ার স্টীমিং এর সাথে ব্যবহার করলে সবথেকে ভালো কাজ করে। গরম পানির ভাপ বা হেয়ার স্টীম নিলে চুলের ফলিকল খুলে যায়, এতে মাস্ক চুলের ভেতরে প্রবেশ করে এবং চুলকে করে ময়েশ্চারাইজড ও হেলদি। এক্সট্রা হাইড্রেশনের জন্য এই ধরনের চুলে লিভ-ইন-কন্ডিশন বা হেয়ার সিরাম ব্যবহার করলে চুল থাকে ফ্রীজ ফ্রী অ্যান্ড শাইনি।

 

মিডিয়াম/নরমাল পোরোসিটি হেয়ার

মিডিয়াম/নরমাল পোরোসিটি হেয়ার বা চুলের গঠনে কিউটিকেলস অনেক নরম থাকে তাই চুলের টাইপ অনুযায়ী যে কোন ধরনের হেয়ার কেয়ার খুব সহজেই  চুলের সাথে মানিয়ে যায়। তাই নরমাল হেয়ার কেয়ার রুটিন মেইনটেইন করলেই চুল থাকবে ঘন ও সুন্দর।

 

হাই পোররোসিটি হেয়ার

হাই পোরোসিটির চুলে আর্দ্রতা খুব দ্রুত আসে আবার তেমনি ভেতর থেকে চলেও যায়। তাই প্রায় ১ দিন পর পরই চুল অয়েলিং, ক্লিঞ্জিং অ্যান্ড কন্ডিশনিং করতে হয়। এই ধরনের চুল অল্পতে ভিজে গেলে খুব দ্রুত শুকিয়ে নেয়া যায়। আবার বাতাসে আর্দ্রতা বা অতিরিক্ত হিউমিডিটি থাকার কারণে চুল কিছুটা রুক্ষ হয়ে ওঠে।  পরিমাণের চেয়ে বেশি আর্দ্রতা চুলকে ভেতর থেকে ফ্রীজি করে দেয়। এত চুল কুঁচকে যেতে শুরু করে। তাই এই ধরনের চুলে লাইট ওয়েট কিন্তু হাইড্রেটিং নারিকেল তেল, অলিভ অয়েল , আরগান অয়েল এবং ডিপ কন্ডিশনিং এর জন্য হেয়ার কেরাটিন, কোলাজেন মাস্ক ইত্যাদি ব্যবহার চুলের স্বাভাবিক আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করবে।

কিভাবে বুঝবেন আপনার চুলের পোরোসিটি কেমন?

খুব সহজ, পরিষ্কার, শুকনো একটি চুলের স্ট্র্যান্ড নিন। এক গ্লাস পানিতে ফেলে দিন।

২–৪ মিনিট পর খেয়াল করুন:

  • চুল যদি ভেসে থাকে তাহলে সেটি লো পোরোসিটি
  • গ্লাসের মাঝামাঝি ভেসে থাকলে মিডিয়াম/নরমাল পোরোসিটি
  • গ্লাসের নিচে একদম ডুবে গেলে হাই পোরোসিটি

 

চুলের পোরোসিটি জানা থাকলে, চুলের যত্ন নেওয়াটা আরও সহজ ও কার্যকর হয়।

সুন্দর চুলের জন্য আমাদের চেষ্টা সব সময় অব্যাহত আছে আর থাকবে। কিন্তু চুলের ধরন ও সমস্যা না বুঝে দামী হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করলেই যে চুল থাকবে বিষয়টি কিন্তু এমন নয়। আমাদের চুল শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় বেশ নমনীয়। তাই তার যত্নে থাকতে হবে নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও সতর্কতা। তাই চুলে কোন কিছু ব্যবহার করার আগে অবশ্যই আপনার চুলের ধরন বুঝে নিন। যত্নে থাকুক আপনার সুন্দর চুল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *