Discover Natural Beauty Tips
তীব্র গরমে ঘরোয়া উপায়ে তৈরি করুন দারুণ কিছু ফেইস মাস্ক

তীব্র গরমে রোদ, ঘামে সব মিলে ত্বকের অবস্থা একেবারে নাজেহাল । তাই বলে কি কাজে এখন বাইরে বের হওয়া যাবেনা, ব্যাপারটি কি এমন? ঠিক তা নয়। তবে সময়ের সাথে সাথে প্রকৃতির এই প্রখরতা এখন অসহনীয়। এর মাঝে আমাদের ত্বক অত্যন্ত সংবেদনশীল। তাই আবহাওয়ার এই পালাবদলের জন্য প্রয়োজন হয় বাড়তি যত্নের। কিন্তু স্কিন সুইটেবল এতো কিছু ব্যবহারের পর কেনো মিলছেনা ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা? আবার স্কিনে সানবার্ন কিংবা ট্যানিং এর কারণে রেগুলার স্কিন কেয়ার রুটিন মেনে চলা হয়ে উঠছে কঠিন।
কাজের চাপে অনেকটা সময় নিয়ে স্কিন কেয়ার করাও হয় না। যদি ঘরোয়া উপায়ে কিছু ফেইস প্যাক তৈরি করা যায় তাহলে কেমন হয়।
চলুন দেখে নেয়া যাক এই গরমে খুব সহজেই তৈরি করে নেয়া যায় এমন কিছু ফেইস মাস্ক।
১.শসা ও টকদই- এর মাস্ক
উপকরণঃ
১. শসা
২. টক দই
প্রস্তুত প্রণালীঃ
একটি শসার অর্ধেক ব্লেন্ড করে কিংবা ২ টেবিল চামচ সমপরিমাণে শসার রস ও ১ টেবিল চামচ টক দই একসাথে ভালোমতো মিশিয়ে নিন। এরপর পুরো মুখ ও গলায় সমানভাবে ব্যবহার করুন। ১৫-২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
কি কি উপকারিতা পাওয়া যায়?
শসা- তে আছে ভিটামিন সি, কে, সিলিকা ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকে কোলাজেন প্রোডাকশন বুস্ট করে স্কিন ইলাস্টিসিটি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে সেই সাথে ত্বক করে ভেতর থেকে উজ্জ্বল। এটি চোখের চারপাশে ফোলা ভাব বা পাফিনেস ও ডার্ক সার্কেলস কমিয়ে আনতে দারুণ কার্যকর। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রোপার্টিজ স্কিনে সানট্যান কময়ে আনতে সাহায্য করে।
অনেকে মনে করেন, টক দই অয়েলি স্কিনের জন্য ঠিক হবে কিনা। টক দই সব ধরনের ত্বকের যত্নে সুইটেবল। টকদই –তে আছে ল্যাক্টিক অ্যাসিড ও জিঙ্ক যেটি জেন্টাল এক্সফোলিয়েট করে স্কিনে অতিরিক্ত সিবাম উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে এবং পোরস আনক্লগ করে একনি কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। এতে থাকা প্রোটিন ন্যাচারাল কোলাজেন প্রোডাকশনে সহায়তা করে। এতে স্কিনের ইলাস্টিসিটি বৃদ্ধি পায় এবং ত্বক হয় ময়েশ্চারাইজড। টক দই সেনসিটিভ স্কিনে ইরিটেশন কমিয়ে আনতে দ্রুত কাজ করে।
২.শসা ও অ্যালোভেরা – এর মাস্ক
উপকরণঃ
১. শসা
২. অ্যালোভেরা
প্রস্তুত প্রণালীঃ
একটি শসার অর্ধেক ব্লেন্ড করে শসার রস ও ২ টেবিল চামচ গাছের অ্যালোভেরা বা জেল একসাথে মিশিয়ে নিন। এরপর মুখ ও গলায় সমানভাবে ব্যবহার করুন। ১৫-২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
কি কি উপকারিতা পাওয়া যায়?
অ্যালোভেরা-তে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি প্রোপার্টিজ স্কিনের সানবার্ন বা হিট র্যাশ থেকে হওয়া ইনফ্ল্যামেশন ও স্কিন ইরিটেশন কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। এতে স্কিনে রেডনেস কমে আসে। ময়েশ্চারাইজিং এজেন্ট সমৃদ্ধ অ্যালোভেরা জেল ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে। এতে রিংকেলস ও ফাইন লাইনস কমে আসে।
শসা স্কিনে ন্যাচারাল হাইড্রেটর হিসেবে কাজ করে যেটি স্কিনে ইনফ্ল্যামেশন কমিয়ে লম্বা সময়ের জন্য ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখে।
৩.গোলাপ জল ও মধু – এর মাস্ক
উপকরণঃ
১. গোলাপ জল
২. মধু
প্রস্তুত প্রণালীঃ
একটি পাত্রে ২ টেবিল চামচ রোজ ওয়াটার ও ১ টেবিল চামচ মধু একসাথে মিশিয়ে মুখ ও গলায় সমানভাবে ব্যবহার করুন। ১৫-২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
কি কি উপকারিতা পাওয়া যায়?
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি সমৃদ্ধ গোলাপ জল স্কিনে ন্যাচারাল হিউমেক্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করে। স্কিনে প্রোপার হাইড্রেশনের সাথে সাথে সানবার্ন, রেডনেস কমিয়ে আনে এবং পোরস মিনিমাইজ করতে সাহায্য করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
মধু হাইড্রশনের সাথে সাথে সানবার্নের কারণে স্কিন পাফিনেস ও ড্রাইনেস কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। সেই সাথে স্কিন রাখে হেলদি ও ময়েশ্চারাইজড।
৪.গ্রীন টি ও নারিকেল তেল এর মাস্ক
উপকরণঃ
১. ফুটানো গ্রীন টি
২. নারিকেল তেল
প্রস্তুত প্রণালীঃ
প্রথমে এক কাপ গ্রীন টি ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিন। এরপর এতে এক টেবিল চামচ নারিকেল তেল নিয়ে একসাথে মিশিয়ে নিন। এরপর একটি কটন প্যাড বা তুলার সাহায্যে মুখ ও গলায় বিশেষ করে সানবার্ন যেখানে আছে সেখানে ব্যবহার করুন। ১৫-২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
কি কি উপকারিতা পাওয়া যায়?
গ্রীন টি তে আছে হাইড্রোসল যা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া এতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান ত্বকে অ্যাক্টিভ একনি কমিয়ে আনতে সাহায্য করে।
নারিকেল তেল কার্যকরভাবে সানবার্ন কমিয়ে আনতে সাহায্য করে । এছাড়াও এতে থাকা লরিক ও ক্যাপ্রিক অ্যাসিড স্কিনের বিভিন্ন ইনফেকশন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
তবে, একটি বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখা প্রয়োজন স্কিনে যদি একনির মতো সমস্যা থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে লাইট ওয়েট এবং নন-কমেডোজেনিক কোকোনাট অয়েল ব্যবহার করলে সবচেয়ে ভালো।
যে কোন ধরনের ফেইস মাস্ক সপ্তাহে ১-২ বার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। তবে ত্বকে যদি সমস্যা খুব বেশী হয়ে থাকে তাহলে একেবারে মাস্ক নির্ভর না হয়ে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। যে কোন স্কিন কেয়ারের শুরুতে সম্ভব হলে প্যাচ টেস্ট করে নিন।
ব্যাস্ততায় হয়ত ত্বকের যত্ন অনেক সময় হয়ে ওঠে না। কিন্তু আবহাওয়ার সাথে ত্বকের মানিয়ে নিতে কিছুটা সময়ের প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই তার পালাবদলের সাথে সাথে ত্বকের যত্নের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। অতিরিক্ত গরমে সানবার্নের কারণে ড্যামেজ হয়ে যাওয়া স্কিনে সময় সাপেক্ষে ঘরোয়া কিছু উপাদান হতে পারে সেইফ স্কিন কেয়ার চয়েস। যত্নে থাকুক আপনার সুন্দর ত্বক।